1. salmankoeas@gmail.com : admin :
রোজা ও কোরবানীর প্রকৃত হকিকত বনাম আমাদের নৈতিক বর্তমান আধুনিক বাস্তবতায় ইসলামের আদর্শিক শিক্ষা আজ ভূ-লন্ঠিত !! - দৈনিক ক্রাইমসিন
বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫, ০৫:১৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
মৌলভীবাজারে রোজাদার পথচারিদের মাঝে তারেক রহমানের উপহার বিতরণ করলেন নাসের রহমান। মাদক চোরাকারবারির প্রতিবাদ করায় সাংবাদিক দম্পতির বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা ডিমলায় তিস্তার বালুমহাল খুলে দেওয়া জন্য মানববন্ধন মাধবপুরে জুলাই অভ্যুত্থানে নিহত শহীদ পরিবারের পাশে দাঁড়ালো ছাত্ররা! পুলিশ হেফাজত থেকে পালানো জালাল র‌্যাবের হাতে আটক রাস্তা দখল নিয়ে সাংবাদিকদের বক্তব্য দেয়ায় সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার সেই শিশু! চিরিবন্দরে এলাকায় বিয়ের ৩ দিন পর গৃহবধূকে হত্যা কাজিপুরে অটোরিক্সা চালক খু/ন পটুয়াখালী ভার্সিটিতে, জাতীয়তাবাদী কর্মকর্তা পরিষদের দোয়া ও ইফতার মাহফিল।। বড়লেখায় ধর্ষণের শিকার শিশুটির পাশে নাসের রহমান

রোজা ও কোরবানীর প্রকৃত হকিকত বনাম আমাদের নৈতিক বর্তমান আধুনিক বাস্তবতায় ইসলামের আদর্শিক শিক্ষা আজ ভূ-লন্ঠিত !!

Reporter Name
  • Update Time : শুক্রবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫
  • ৩৭ Time View

রোজা ও কোরবানীর প্রকৃত হকিকত বনাম আমাদের নৈতিক বর্তমান আধুনিক বাস্তবতায় ইসলামের আদর্শিক শিক্ষা আজ ভূ-লন্ঠিত !!
লেখক ও গবেষকঃ জাহারুল ইসলাম জীবন -বিশেষ প্রতিনিধি।
প্রথম প্রর্যায়ে বলতেই হয় সারা বিশ্বের মুসলিম উম্মার ধর্মীয় প্রধান দুইটি আনন্দ ও খুশির উৎসব প্রচলিত রহিয়াছে : একটি হচ্ছে ঈদুল ফিতর অর্থাৎ রোজার ঈদ আরেকটি হচ্ছে ঈদুল আযহা বা কোরবানির ঈদ।
বিস্তারিত ব্যাখ্যায় প্রথম ধাপে সিয়াম সাধনায় রোজা পালন পূর্বক ঈদুল ফিতরের আনন্দ উৎযাপন সমন্ধে কিছুটা বলার একান্তই প্রয়োজন মনে করছি।
মুসলিম সম্প্রদায় পবিত্র রমজানুল মোবারক মাসে ৩০ দিন কঠোর সিয়াম সাধনার মাধ্যমে মহান আল্লাহ্ পাক আমাদের নিজেশ্ব আত্মার আত্মশুদ্ধি জন্য জ্বীন এবং ইনসান/মানুষ এর জীবনের ঘটমান সমস্ত পাপ ও পঙ্কিলতা হইতে নিজেকে পরিপূর্ণ পাপমুক্ত করণের জন্য এবং নিজো অন্তরে খোদা ভীতি অর্জনের নিমিত্বে, নিজেকে ক্ষুধার অগ্নিতে বা আগুনে জ্বালিয়ে নিজ শরীরের পাপ ও পঙ্কিলতার দ্বার যুক্ত যে সকল ইন্দ্রিয় সমূহ সচল থাকে,সেই সকল ইন্দ্রিয় সমূহ ক্ষুধার অগ্নিতে শারীরিক দুর্বলতার মাধ্যমে নিজের ভিতরে আল্লাহ্ বিরোধী অদৃশ্য বিরুদ্ধচারণ আমিত্বর আবরণে মোড়ানো নাফস্ ও রুহু কে দুর্বল করনের দ্বারা নিজের ঈমান ও হৃদয়কে আল্লাহ্ মুখী করিয়া, প্রকৃত অর্থে সিয়াম সাধনার মাধ্যমে নিজের আত্মশুদ্ধি জাগ্রত করে খোদাভীতি অর্জন পূর্বক অদৃশ্য ঈমান ও হৃদকে জাগ্রত করিবার অভিপ্রায়ে তাত্ত্বিকভাবে বলতে গেলে হকিকতের ভাষায় বলতে হয় যে,সকলের ভিতর নিজো নিজো ছূঁরুতে বা নিজ রুপীয় অদৃশ্য আত্মা এবং হামজাদ….কে পরিপূর্ণ ভাবে মসুলমান বানিয়ে নেওয়া অতীব জরুরী। বিশেষ ভাবে বলতে গেলে বলতেই হয় যে,নবী করীম (সঃ) এর বর্ণিত হাদিস অনুযায়ী নবী করীম (সঃ) বলেছিলেন যে, আমার কাছে যে শয়তানটি ছিল আমি তাহাকে পরিপূর্ণভাবে মুসলমান বানাইয়া ফেলেছি। বাস্তবিক দিক দিয়ে বিশ্লেষণ করিয়া দেখিলে দেখা যায় যে, নবী-রাসূলগণ এবং সাহাবায়ে কেরাম সহ আল্লাহর মনোনীত অলি আল্লাহ্ সহ বড় বড় সাধক গন বছরের প্রায়ই অধিকাংশ সময়-ই নিজেরা রোজা রাখার মাধ্যমে নিজো নিজো নফস্ কে দমন করে রাখার জন্য রোজা রাখিতেন। আমরা যাহারা দুর্বল ঈমানের অধিকারী তাহারা কিছুটা হলেও নিজো নিজো কৃতকর্মের সমস্ত পাপ হইতে মুক্ত করণের জন্য এবং আল্লাহ্ প্রেমে নিজেকে সম্পূর্ণভাবে আত্ন-সমর্পিত সহকারে দৃঢ় ঈমানী শক্তির জজবা ও দৃঢ় হৃদয়িক সংকল্প সহকারে তাকওয়া অর্জন করতঃ মুত্তাকীত্ব অর্জন পূর্বক মুমিন ও খাঁটি মুসলমান হওয়ার জন্য সল্প সময় হলেও প্রতি বছরে মাত্র একমাস রমজানের পবিত্রতা অর্জন সহকারে সিয়াম সাধনায় ব্রত হইয়া রোজা পালনের মধ্য দিয়ে আল্লাহ্ তায়ালার প্রকৃত সন্তুষ্টি অর্জনের মনস্তাত্ত্বিক শান্তির মাধ্যমে এই মাহে রমজানুল মোবারক মাসের শেষে পবিত্র ঈদুল ফিতরের আনন্দ এবং খুশি একজন মুমিন ও মুসলমান বান্দা হিসেবে পরিপূর্ণভাবে উপভোগ করে থাকি।
দ্বিতীয় ধাপে এবার আমরা আসি কোরবানির প্রকৃত ধর্মীয় হকিকত বনাম আমাদের নৈতিক বাস্তবতায় আধুনিক কোরবানির প্রকৃত চিত্র :
সমগ্র মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় ধর্মীয় আনন্দ ও খুশির উৎসব ঈদুল আযহা অর্থাৎ কোরবানির ঈদ।
কোরবানি বলতে আমরা যাহা বুঝি, তাহা হলো এই পৃথিবীতে নিজস্ব হৃদয়িক ঈমানে ধারণকৃত ষড়রিপুর সংযোগ ক্ষেত্র বিশিষ্ট পৃথিবী কামিয়াবী ভাবের আত্মপ্রকাশ তথা প্রেম ও ভালোবাসা কেবলমাত্র আল্লাহ তালার সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে এই পৃথিবী কামিয়াবী প্রেম বা ভালোবাসা নামক প্রিয় বস্তু একান্তই আল্লাহ্ তালার প্রতি সন্তুষ্টি অর্জনের নিমিত্তে আত্মত্যাগে বিসর্জন দেওয়া বা নিঃশেষ করে দেওয়া বা হত্যা করা।
প্রচলিত কোরআন ও হাদিসের উল্লেখিত বিবরণ অনুযায়ী সমগ্র মুসলিম উম্মার মুসলিম জাতির পিতা হযরত ইব্রাহিম (আঃ) বারবার স্বপ্নের মাধ্যমে জানতে পারলেন যে, আল্লাহপাক পরওয়ার দিগার, তিনার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য হযরত ইব্রাহিম আলাইহি (আঃ) কে, তিনার সবচেয়ে প্রিয় ও জানের বস্তু কুরবানী করিতে হবে কেবলমাত্র আল্লাহ্-র ওয়াস্তে আল্লাহ্-র জন্য-ই !
হযরত ইব্রাহিম (আঃ) এই স্বপ্নের হকিকত, প্রথম প্রথম বুঝতে পারছিলেন না। পরবর্তীতে তিনি গভীরভাবে চিন্তা গ্রস্ত হয়ে পরিলেন এবং তিনি অনেক চিন্তা ও ভাবনা করিয়া দেখিলেন যে, তিনার সবচেয়ে কাছের ও প্রিয় জানের বস্তু হচ্ছে তিনার “সন্তান” ইসমাইল (আঃ)।
তাই তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য তিনি তিনার সবচেয়ে প্রিয় ও জানের বস্তু নিজের সন্তান ইসমাইল (আঃ) কে আল্লাহর ওয়াস্তে আল্লাহর রাস্তায় আল্লাহ সন্তুষ্টির জন্য-ই কোরবানি দিবেন।
হযরত ইব্রাহিম আলাইহি (আঃ) তিনার এই স্বপ্নের কথা তিনার সন্তান ইসমাইল (আঃ) কে জানাইলেন। ইসমাইল (আঃ) তিনার পিতা হযরত ইব্রাহিম (আঃ) এর কাছে বারবার আল্লাহ প্রদত্ত স্বপ্নের কথা শোনার পর তিনি তিনার পিতাকে বলিলেন যে, আপনি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য আমাকে কোরবানি করেন! আমি এই কোরবানির জন্য প্রস্তুত রহিয়াছি। আল্লাহর নির্দেশ পালনের জন্য হযরত ইব্রাহিম ( আঃ) তিনার পুত্র ইসমাইল ( আঃ) কে কোরবানি দেওয়ার জন্য দূরের পাহাড়ে একাকী নিয়ে গেলেন অতঃপর ইসমাইল (আঃ) কে কুরবানির দেওয়ার জন্য প্রস্তুত করিলেন, কিন্তু তিনি হজরত ইসমাইল (আঃ) দিকে তাকিয়ে বারবার মহব্বতের মায়ায় পড়ে যাচ্ছেন, যাহার কারণে ইসমাইল (আঃ) কে কোরবানি করিতে পারছেন না ! এমতাবস্থায় ইসমাইল (আঃ) তিনার পিতা হযরত ইব্রাহিম (আঃ) কে বলিলেন হে আমার পিতা আপনি আমার মুখের দিকে তাকিয়ে বারবার চেষ্টা করার পরেও কোরবানি দিতে পারতেছেন না, তাই আপনি আপনার চক্ষু কাপড় দ্বারা বেঁধে নিয়ে আমাকে কোরবানি করুন।
হযরত ইব্রাহিম (আঃ) হযরত ইসমাইল (আঃ) এর কথামতো তিনার নিজের চক্ষু কাপড় দ্বারা বেঁধে নিলেন এবং ইসমাইল আঃ কে কোরবানি দেওয়ার জন্য শুয়াইয়া দিলেন এবং ধারালো ছুরি দ্বারা ইসমাইল (আঃ) এর গলায় আল্লাহর হুকুমে আল্লাহর নামে কোরবানি দেওয়ার জন্য ছুরি চালাইলেন, কিন্তু আল্লাহর করুনা ও দয়ার মহব্বতের কুদরতি মহিমায়, ইসমাইল (আঃ) জবাহ্ না হয়ে ইসমাইল (আঃ) এর জায়গায় একটি বেহেস্তি দুম্বা সাদৃশ্য পশু জবাহ্ হয়ে পড়ে রয়েছেন এবং ইসমাইল (আঃ) হযরত ইব্রাহিম (আঃ) এর পাশে দন্ডায়মান অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছেন! এখানে আল্লাহ পাকের হুকুম ও প্রেমের পরীক্ষায় ইব্রাহিম (আঃ) পাশ করিলেন এবং আল্লাহকে সন্তুষ্ট করিবার জন্যই প্রকৃত অর্থে ইসমাইল (আঃ) কে কোরবানি দিয়েছিলেন। আল্লাহপাক পরম করণময় দয়ালু দাতা তিনি ইসমাইল (আঃ) এর পরিবর্তে একটি বেহস্তি পশু দুম্বা কোরবানি করিয়া দিলেন তিনার নিজ কুদরতি ক্ষমতায়! এটাই কোরআন হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী কোরবানির আদর্শিক আল্লাহর মহিমান্বিত এবং বাস্তবিক প্রেমের শিক্ষা, যাহা পরবর্তীতে ইসলাম ধর্মের অনুসারী মুমিন মুসলমান বান্দাগণের উপরে সাধ্য ও সামর্থ্য অনুযায়ী ফরজ করা হয়েছে।
প্রাসঙ্গিক ভাবে ধর্মীয় তাত্ত্বিকতায় সৃষ্টি রহস্যতত্ত্বে জানা যায় যে,আল্লাহ তায়ালার মনোনীত নবী-রাসূলগণ ও আল্লাহ তালার প্রেরিত ওলী-আল্লাহগন, এই নশ্বর জগৎতে অর্থাৎ এই পৃথিবীতে তিনারা সকল পাপ ও পাপ সংগঠিত করণ ষড়রিপু ও লোভ লালসা হইতে চিরো মুক্ত। তাহার পরেও এই পৃথিবীর ধরাধামে এসে নবী রাসূলগণ এবং অলি আল্লাহগণ প্রেরিত হওয়ার পর হইতে নিজ নিজ সংসারের কিছুটা হলেও আপন সন্তান-সন্ততির প্রতি প্রেম-ভালোবাসা ও মায়া মহাব্বতে জড়িয়ে পড়ে বা পতিত হয়। যাহার কারণে আল্লাহ তালা তিনার প্রেরিত নবী ও রাসুলগণ সহ তিনার মহব্বতের অলি-আল্লাহগন কে এই পৃথিবীতে ন্যূনতম মাত্রায়ও যেন তিনার অর্থাৎ আল্লাহ ব্যথিত পৃথিবী কামিয়াবি কোন প্রেম ভালবাসা বা নিজস্ব কোন মহাব্বতে পতিত না হয়, তাহার কারণে আল্লাহ তালা একান্ত ভাবেই তিনার সকল বন্ধুগণকে এই পৃথিবী কামিয়াবী সকল মায়াবী মহব্বত ও নিজস্ব প্রেম ভালবাসা তথা নিজের সবচেয়ে প্রিয় বস্তুু আল্লাহ তালা ব্যথিত অন্যকিছু বা কেহ-ই না হয়, কেবল মাত্র সবকিছুই যেন আল্লাহ্ তালার উদ্দেশ্যে নিবেদিত থাকে। এই উদ্দেশ্যেই সৃষ্ট এই পৃথিবীতে তিনার প্রেরিত নবী রাসূলগণ সহ অনুসারীগণ ভবিষ্যতে এই পৃথিবীতে ধর্মীয় আবেশে ইসলামী মতাদর্শনের শিক্ষানীয় শিক্ষা র মতাদর্শন বাস্তবে প্রতিষ্ঠিত ও চলমান থাকে তাহার উদ্দেশ্যেই বাস্তবিক ঘটনা বহুল কিছু নমুনা আল্লাহপাক এই পৃথিবীতে তিনার প্রিয় বান্দাগনের জন্য আদর্শ অনুপ্রেরণা ও শিক্ষা হিসাবে চিরো-নিদর্শন রাখিয়াছেন যাহা পৃথিবীর শেষ অব্দি চলমান থাকিবে।
ধর্মীয় তাত্ত্বিকতায় প্রকৃত কোরবানির হাকিকত অনুযায়ী বিশ্লেষণ করিলে বাস্তবিক কিছু দিক বিশ্লেষণ করতেই হয়ঃ-
আল্লাহ সুবহানাহু তায়ালার সৃষ্টিতত্ত্বের প্রথম ধাপ বিশ্লেষণ করিলে দেখা যায় যে, আল্লাহ তালা তিনার কুদরতি সৃষ্টির রহস্য তত্ত্বে জ্বীন এবং ইনসান অর্থাৎ মানুষ সৃষ্টি করিয়াছেন। জ্বীন জাতিকে আল্লাহ তালা কেবলমাত্র আগুন দিয়েই সৃষ্টি করেছেন এবং এই বিশ্ব ব্রাম্মাণ্ডে তাহাদের লোক চোক্ষের আড়ালে অদৃশ্য করিয়া রাখিয়া আছেন। তাহাদের উপরেও আল্লাহর প্রেরিত নবী রাসূলগণ এবং কোরআন ও হাদিস সহ ইসলামের যাবতীয় আইন কানুন,বিধি নিষেধ এবং ধর্মীয় সমস্ত ইবাদত বন্দেগী ফরজ করেছেন, তদ্বরুপ ফরজ করা হয়েছে ইনসান অর্থাৎ মাটির তৈরি আদম সন্তান মানুষের উপরেও।
জ্বীন এবং আদম সন্তান অর্থাৎ মানুষ তৈরীর হকিকত ও বহিরাবরণ সহ আল্লাহ তালার গোপন এবং প্রকাশ্য সৃষ্টিতত্ত্বের তাত্ত্বিকতা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে, আল্লাহ তালা জ্বীন ও আদম অর্থাৎ মানুষ সৃষ্টিতে তিনি তিনার নিজের নিজেস্ব ছুঁরুতের মুখমণ্ডল সম্বলিত চেহারায় নিজের অবয়বে দান বা সৃষ্টি করিয়াছেন সৃষ্টিতত্ত্বের অদৃশ্য প্রথম ধাপে। যাহা আল্লাহ্-র নিজস্ব রূপ বা চেহারায়, যাকে বলা হয় জাতে “হাকিকি” বা নিজস্ব রূপীয় জাতি সত্তা অর্থাৎ-আল্লাহ তালার নিজস্ব রুপের অদৃশ্য নূরীও আত্মা ! এই অদৃশ্য আল্লাহর নিজস্ব আমানত রুপি আত্না ও রুহু রুপি পবিত্র হুকুম জীবাত্মার ভিতরে গোপনে প্রবেশ করিয়া আল্লাহর নিজেশ্ব অদৃশ্য জাত ৮-টি সেফাতি রুপের গুনাগুন জীবন দশায় জ্বীন ও ইনসান তথা মানুষের ভিতরে অদৃশ্য রুপে দৃশ্যমান অবস্থায় থাকে, তাহা হলোঃ- স্মৃতিশক্তি-ইচ্ছা শক্তি-দেখন/চোখের দেখা শক্তি-মুখ দ্বারা কথন/কথা বলার শক্তি-জীব্বাহ দ্বারা লেহন/ স্বাধ গ্রহন শক্তি- কানের দ্বারা শ্রবণ/কানে শোনার শক্তি- শরীরের দ্বার অনুভূতি শক্তি/শারীরিক ব্যথা বা আঘাতের অনুভূতি প্রকাশ পাওয়ার শক্তি- নাকের মাধ্যমে শ্বাস প্রশ্বাস বা নিঃশ্বাস আদান-প্রদান শক্তি, যাহা জীবকুলের ভিতর কেবলমাত্র জ্বীন এবং ইনসান তথা মানুষের ভিতর অদৃশ্যভাবে বিরাজমান থাকে। জীবের মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহর কাছে ফিরিয়ে নেওয়া হয় এবং মৃত্যু লাশে পরিনিত হয়।
এই অদৃশ্য আত্মাকে জাতে হাকিকি বলে, পৃথিবীতে মানুষ ও জ্বীন জাতির মধ্যে আগমনের পর বিরাজমান থাকে, জীবাত্মা রুপে।
এই জীব আত্মা সম্বলিত অদৃশ্য আত্মা কেবলমাত্র জ্বীন ও ইনসান তথা মানুষের মাঝেই বিরাজমান,বাঁকি সকল জীব কুল তথা পশু পাখির খেছর-ভূসর সকলের ভিতর কেবলমাত্র জড় আত্মারূপে থাকে, যাহা শুধুমাত্র এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ড তথা পৃথিবীতে জীবিত অবস্থায় জীবনধারণ ও মৃত্যু পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাকে এবং মৃত্যুর পর তাহার আর কোন অস্তিত্ব থাকেনা। যাহার কারণে পশু পাখির মৃত্যুর পর কোন শাস্তি প্রদান বা হিসাব-নিকাশ নেওয়া হবে না।
আল্লাহ সুবহানুতায়ালার সৃষ্টিতত্ত্বের দ্বিতীয় ধাপটি বিশ্লেষণ করে আমরা যাহা দেখি তাহা হচ্ছেঃ-
কাল্ব, রুহু, ছের,খফি,আকফা,আব্, আতশ,খাক্,বাদ,নাফস্ এই দশটি গুনাগুন বা কর্ম যাহা অদৃশ্য তাহা কেবল জ্বীন এবং ইনসান তথা মানুষের মাঝে বিরাজমান।
দশটি আল্লাহ তালার অদৃশ্য গুনাগুনের ভিতর ছয়টি গুনাগুন আল্লাহ তায়ালার নিজস্ব এবং বাঁকি চারটি গুনাগুন এই পৃথিবী থেকে আল্লাহপাক তিনার ফেরেশতাগন দ্বারা নিজস্ব সৃষ্ট জগৎ হইতে সংগ্রহ করিয়াছেন এবং যাহা জ্বীন ও ইনসান তথা মানুষের ভিতর অদৃশ্যে প্রবেশ করিয়া দৃশ্যমান দেহ অবয়ব আল্লাহ পাক তৈরি করেছেন, এই গুনাগুনকে জড় আত্মা বলা হয়। যাহার কারণে এই চারটি গুনাগুন সম্বলিতঃ-আব-আতস-খাক-বাদ অর্থাৎ আগুন-মাটি-পানি ও বাতাস ইহায় মানুষের জড় জগৎতের লতিফা। যাহা জ্বীন ও ইনসান তথা মানুষ ও জীবকুলের সকল পশু পাখির মৃত্যুর সঙ্গেই এই পৃথিবী থেকে বিলীন বা শেষ হইয়া যায়।
কবরের মাটি,হিউমাস,ব্যাকটেরিয়া ও পোকামাকড়ের খাবার সহ পঁচন প্রক্রিয়া দ্বারা এবং শ্মশানের আগুনে মৃত্যু মানুষের দেহকে দাহ্ করণের মাধ্যমে শেষ হয়ে যায়।
তাই, আমি জাহারুল ইসলাম জীবন- কবি,সাহিত্যিক,লেখক ও গবেষক হিসেবে আমার ভাষায় কবিতার কাব্যিক ভাষার মাধ্যমে কোরবানির প্রকৃত হকিকত নিম্নে তুলে ধরার নূন্যতম চেষ্টা করেছি মাত্রঃ-
মোনের পশুকে দাও কোরবানি ও-মোন
বনের পশুকে-নই,
এক-এক করে কোরবানি-দাও তুমি
প্রতি বছর এক-একটি মনের-হিংস্রতার পশু হত্যার মাধ্য দিয়ে।
কাম,ক্রোধ,লোভ-লালসা,হিংসা,নিন্দা, কামনার ষড় রিপুকে দাও কোরবানি,
এক একটি পশুর উপর মনের অঙ্কনে নিজেকে ভর করে।
পশুর সাদৃশ্য করণে নিজো মনের অন্তঃদহনের-অন্তঃকরনে,
শেষের সপ্তম-তম কোরবানি দাও তুমি,
তোমার নিজো নামে নিজের ষড় রিপুর আমিত্বের অহমিকাকে হত্যা করনের মাধ্যমে।
নিজো নাফসিনিয়াতের রুহানিয়াত আল্লাহর তরে,
বেঁচে থেকেও নিজেকে মৃত্যু সাজে সজ্জিত করে।
বেঁচে থমৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ পূর্বক আল্লাহর ওয়াস্তে আল্লাহকে রাজি খুশির তরে।
কোরবানি দাও তুমি আল্লাহর নামে আল্লাহ্-র ওয়াস্তে।
টাকার গরমে দিওনা কোরবানি লোক দেখানোর তরে,
তোমার কোরবানি হইবে না দেখো হকিকতে।
যে বছর যে রিপুকে দিবে তুমি কোরবানি,
সেই দিন থেকে সেই রিপুর কাজ
করিতে পারবে না কোন অন্যায় ভাবে তুমি।
ষড়-রিপু তোমার মোনের খোরাক
পৃথিবীতে জীবন চলার চাকচিক্যময় বাহন,
জীবনের তরে মুক্ত করে হত্যা করতে পারবে কি তারে তুমি ?
ভেবে চিন্তে সিদ্ধান্ত নাও কোরবানি দেওয়ার আগে।
পাপ-পূণ্যের টাকা দিয়ে হাট থেকে কয়েক দিন আগে,
পশু কিনিলে তুমি নাদুশ-নুদুশ দেখে লোক দেখানোর তরে।
লোক দেখানোর বড়লোকি ভাবের অহংকারের বসে,
দিওনা কোরবানি তুমি আল্লাহর আদেশ কে অ-মান্য করে।
মনের পশু কোরবানি দেওয়া কিন্তু এতো সহজ নয়,
জিন্দা থেকেই মৃত্যু স্বার্ধ কোরবানির মাধ্যমেই,
এই পৃথিবীতে নিজেকেই পেতে হয়ে।
কবিতার মাধ্যমে ক্ষুদ্র পরিসরে যাহা বুঝাতে চেষ্টা করেছি, তাহা কিছুটা হলেও আপনাদের কাছে সহজ ভাবে অবমুক্ত করে বলতে চাই।
কাল-রুহু-ছির-খফি-আকফা-নাফসঃ-আকফা-নাফসঃঃ- এই প্রধান ছয় লতিফা অর্থাৎ ষড়রিপু মানুষ এবং জ্বীনের ভিতরে অদৃশ্য ভাবে বিদ্যমান থাকে, এই পৃথিবীতে জ্বীন এবং ইনসান সৃষ্টি হওয়ার আগে এই ষড়রিপু সমূহ্ আল্লাহ তালার কাছে রক্ষিত অবস্থায় আমানতের প্রতিশ্রুতিতে দায়বদ্ধ পাপমুক্ত অবস্থায় অবস্থান করে এবং আল্লাহ তালার আদেশ-নিষেধ,প্রেম মহব্বত, ভালোবাসা ও ইবাদত ব্যথিত এ-ই ষড়রিপু কিছুই করিত না বা বুঝতো না এবং নিজ থেকে কোন কিছু করার মন মানসিকতাও তাহাদের থাকিতো না। কিন্তু অতীব আশ্চর্যের বিষয় এই পৃথিবীতে জ্বিন এবং ইনসান সৃষ্টি বা জন্ম লাভের সময় তাদের দেহ অবয়বের ভিতর অদৃশ্যভাবে এই ষড়রিপুকে আল্লাহতালা পর্যায় ক্রমে প্রবেশ করিয়া নশ্বর জগৎতে আল্লাহ তালা যখন সৃষ্টি জগতে ভূমিষ্ঠ বা জন্মগত সূত্রে প্রেরণ করেন, তখন এই জ্বিন এবং ইনসান শিশু অবস্থায় বিচরণ করে তখন পর্যন্তও তাহারা নিষ্পাপ এবং যাবতীয় অন্যায় হতে কলস মুক্ত অবস্থায় থাকে। কিন্তু অতীব আশ্চর্যের বিষয় সৃষ্টি জগতে সৃষ্টি হওয়ার পর হইতে পৃথিবী কামিয়াবি জ্ঞান ও বুদ্ধি এবং নিজস্ব স্বার্থপরতা সহ নিজস্ব নাফসের আম্মারা ক্রমান্বয়ে নিজের ভেতর পরিস্ফুটন হওয়া যখন শুরু হয়ে ক্রমান্নয় বয়স প্রাপ্তিতায় সময় পার হওয়ার সাথে সাথে নিজস্ব পৃথিবী-কামিয়াবী মায়ার প্রেমিও ধারায় নাফসি আম্মারার ভালোবাসায় পতিত হয়ে এই নশ্বর পৃথিবীর যাবতীয় প্রেমে পড়ে যায়।
যাহার উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, এই পৃথিবীতে নিজেশ্ব স্বার্থের তরে নিজের সন্তান, শন্ততি, ভূ-সম্পত্তি, অর্থ/টাকা-পয়সা, নিজের বাবা, মা, ভাই, বোন, স্ত্রী, পুত্র সহ পৃথিবী কামিয়াবী যাবতীয় দৃশ্য ও অদৃশ্য কৃতকর্মে, যাহা বিশ্লেষণাত্মক ভাবে বললে প্রতিয়মান হয় যে, নিজের মধ্যে অদৃশ্য ভাবে বিরাজমান পশু রুপিঃ কাম-যাবতীয় যৌন চাহিদা-ক্রোধ/রাগ -লোভ ( কোন কিছু হাসিল করিবার অতিরিক্ত ইচ্ছা )- লালসা ( কোন কিছু প্রয়োজনের অতিরিক্ত নিজের জন্য হাসিল করিবার অতিরিক্ত লালায়িত চাহিদা )-হিংসা ( অন্যায় ভাবে অপরের প্রতি মাত্রারিক্ত পরো হিংসা করণ)- নিন্দা ( অপরের প্রতি অন্যায় বা মিথ্যা অপবাদ বা পরনিন্দা করা)-কামনা ( প্রয়োজনের অতিরিক্ত কোন কিছু এই পৃথিবীতে গচ্ছিত করনের মাত্রাতিক্ত কামনা বা আশা করা )- বাসনা ( মনের ভিতর চাহিদার বিপরীত অতিরিক্ত কোন কিছু অর্জনের জন্য যে বাসনা)- লিপসা ( নিজের মুখ বা জীব্বাহ দ্বারা অপর মানুষের প্রতি গীবত ও মিথ্যাচার করা ও হারাম খাদ্য গ্রহণ )- অহংকার ( এই নশ্বর পৃথিবীতে নিজের ভূ সম্পত্তি ও অর্থের উচ্চাবৃত আকাঙ্ক্ষা হইতে অসহায় গরিব মিসকিন অসাধারণ মানুষের কাছে অহংকার বা দাম্ভিকতা ভরে চলা) ইত্যাদি।
আসুন এবার আমরা জানি কোরবানির মূল হকিকত বা উদ্দেশ্য আল্লাহতালা কেন আমাদের উপর সামর্থক অনুযায়ী ফরজ করিয়াছেন তাহার প্রকৃত উদ্দেশ্য লক্ষ্য কি এবং প্রকৃত কোরবানি বলতে আমরা কি বুঝি? এই কোরবানি কেন এক এক জন ব্যক্তির উপর সাতটি করিয়া ফরজ করা হইয়াছে।
প্রত্যেক মুমিন ও মুসলমান বান্দার উপর কেন সাতটি করিয়া কোরবানি ফরজ করা হইল তাহা আমাদের অতীব জরুরি বা হাকিকি ভাবে অবশ্যই জানা দরকার-
আমাদের প্রতিটা কোরবানি করতে হইবে শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্ট অর্জনের জন্য আল্লাহর ওয়াস্তে আল্লাহর নামে । এই নশ্বর পৃথিবীতে জ্বীন এবং ইনসান তথা মানুষ জীবন দশাই যতদিন এই পৃথিবীতে জীবিত অবস্থায় বেঁচে থাকবে, এই বেঁচে থাকার জন্য নিজস্ব নাফসীও আম্মারার বশীভূত যে ছয়টি প্রধান ষড়রিপুর প্রভাবের ক্রোপানলের মধ্যে পড়ে পৃথিবী কামিয়াবী যাবতীয় পাপ পঙ্কিলতায় প্রতিত হইয়া আল্লাহর প্রতি বিরুপ ও বিরুদ্ধচারণ করতে থাকে এবং আল্লাহর প্রতি যে প্রেম ও ভালোবাসা থাকিবার কথা তাহা ভুলিয়া আল্লাহর প্রতি বিরূপ আচরণে লিপ্ত হয় এবং আল্লাহকে ভুলে যাই। অথচ আল্লাহপাক তিনি এই জ্বীন ও ইনসান তথা মানুষ সৃষ্টি করিয়াছেন শুধুমাত্র তিনার সন্তুষ্টি অর্জন পূর্বক ইবাদত করিবার জন্য এবং তিনার প্রতি সমস্ত প্রেম ও ভালবাসা অর্থাৎ এই পৃথিবীতে নিজের সবচেয়ে প্রিয় বস্তু নিজস্ব জীবন আল্লাহর রাহে কুরবান করিতে, ইহা শুধুমাত্রই এই পৃথিবীতে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন ব্যতিত অন্য কিছুর জন্য নহে।
এই জন্যই প্রতিটা জ্বীন ও ইনসান তথা মানুষ এ-র উপর সাতটি কোরবানি সামর্থ্য অনুযায়ী ফরজ করা হইয়াছে, এর মধ্যে ছয়টি কোরবানি অর্থাৎ প্রতিবছর এক একটি কোরবানি এক একটি ষড়রিপুর ( হিংস্র পশু রুপি রিপু ) উপর ভর করিয়া নিজের জান ও মালের উপর সমস্ত মায়া প্রেম ও ভালোবাসা বিসর্জন বা হত্যা করণের মধ্য দিয়া এক একটি পশুর উপর ভর করিয়া আল্লাহর ওয়াস্তে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন পূর্বক কোরবানি করিতে হয়। যে বছর যে রিপুর কোরবানি যে পশুর ওপর ভর করিয়া করিতে হয়, সেই দিন থেকে আর কোনদিন এই পৃথিবীতে কোরবানি প্রদানকারী জ্বীন ও ইনসান তথা মানুষ ঐ রিপুর ক্রোপানলের কু-খায়েশ হইতে চিরো মুক্ত প্রাপ্ত হইয়া ঐ রিপুর ক্রোপানাল হইতে চির মুক্ত হইতে হয়। আর কোনদিন ওই রিপুর কু-প্রভাব বা হিংসাত্মক পশুত্ব ভাব যেন কোরবানি দাতার উপর কোনক্রমেই এই পৃথিবীর কামিয়াবী নাফসের আম্মারার ভাবের দ্বারা প্রভাবিত বা পরিচালিত না হয়। এইভাবে ছয় বছর ছয়টি পশুর উপর ভর করিয়া কোরবানির দাতাকে তাহার নিজের ভিতরে অদৃশ্য ভাবে লুকায়িত বাস্তবিক ষড়রিপু যেন এই নশ্বর পৃথিবীতে কোন ক্রমেই কোন কার্যক্রমের দ্বারা প্রভাবিত করণ বা সংঘঠিত না হয়।
বাঁকি একটি কোরবানি, কোরবানি দাতাকে তাহার নিজের নামে আল্লাহর ওয়াস্তে আল্লাহকে রাজি খুশির উদ্দেশ্যে নিজের প্রিয় বস্তু নিজস্ব জান/ জীবন আল্লাহ তালার রাহে কোরবানি করিয়া দিতে হয় এবং সেই দিন থেকে উক্ত কুরবানী দাতাকে ঈমানী জজবায় মৃত্যুর সাঁজে নিজেকে নিজের ঈমানী মন বা হৃদয়ে আল্লাহর এবাদত ও প্রেম ভালবাসায় মশগুল হইয়া অদৃশ্য কাফনের কাপড়ে নিজেকে আবৃত করিয়া মৃত্যু মানুষের ন্যায় এই পৃথিবীতে বেঁচে থেকেও জীবন্ত লাশ হয়ে হালাল ও প্রকৃত প্রয়োজন ব্যতীত সকল প্রকার কামনা বাসনার ঊর্ধ্বে থাকিয়া, আল্লাহর হুকুমে প্রকৃত মৃত্যু আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়।
এই ভাবেই মোট সাতটি কোরবানি, কোরবানি দাতার উপর ফরজ করা হইয়াছে। যাহার মধ্যে ছয়টি কোরবানি নিজের সন্তানের মতো কোরবানিকৃত পশুকে অতিপ্রিয় এবং যত্নে লালন পালন করিয়া এই পালনকৃত পশুর উপর ভর বা প্রতিস্থাপিত হইয়া হৃদয়ে প্রচন্ড ব্যথা ও চোখের অশ্রুর বিনিময়ে কোরবানি দাতাকে নিজের মন বা ঈমানী হৃদয়ের মধ্যে অদৃশ্যভাবে লুকায়িত এক একটি ষড়রিপুর নাফসিয়াতি আম্মারার এক একটি কু-খায়েশ কে,এক এক বছর এক একটি করিয়া এক একটি পশুর উপর ছয়টি বছর ছয়টি, পৃথিবী কামিয়াবী পাপিও পাপের আধাঁর বা ধারা-র হিংস্র পশু রুপি কু-রিপুকে জীবনের তরে কোরবানি করতে হয়, হইয়া আল্লাহ তালার প্রকৃত কোরবানির হাকিকত !
প্রত্যেক জ্বীন ও ইনসান তথা মানুষ এর মধ্যে প্রকৃত সামর্থ্য অনুযায়ী প্রত্যেক মুমিন মুসলমানের উপর, হাকিকি ভাবে প্রকৃত অর্থে কোরবানি ফরজ করা হয়েছে।
এখন আমরা আসি আমাদের মধ্যে বর্তমান আধুনিকতার বাস্তবতায় প্রচলিত কোরবানির বাস্তব পরিবেশগত ও সমাজিক এবং নাজুক নিজস্ব মতবাদের দুর্বল ঈমানীয় চাটুকারীতার ধর্মীয় ধারায় কোরবানি দাতাগণের ভিতর কিছু মুমিন মুসলমান ব্যক্তি ব্যতিত, অধিকাংশই মধ্যবিত্ত ও উচ্চ মধ্যবিত্ত,বিত্তবান- ধনী কোরবানি দাতা ব্যক্তিগণ তাহারা তাহাদের অতিরিক্ত টাকা যাহা হারাম- হালাল না দেখিয়া, অকারনে লৌকিকতা ও লোক দেখানো সামাজিক স্ট্যাটাস এবং বড়লোকি ট্রেডিশনে উপর ভর করিয়া অহংকারের দাম্ভিকতায় সামাজিক মর্যাদা ও কোরবানি দাতা সাঁজিবার অভিপ্রায়ে প্রতিযোগিতামূলক প্রয়োজনের তুলনায় মাত্রাতিরিক্ত টাকার গরমে অতি মূল্যমানে কোরবানির দুই এক দিন আগে হাট-বাজার বা মহল্লায় থেকে বড় মোটাতাজা নাদুস নুদুস পশু ক্রয় করিয়া কোরবানি দিয়ে থাকেন!!
যেখানে থাকে মাংসের পরিমাণ কত হইবে তাহার হিসাব নিকাশ এবং অতিরিক্ত টাকার গরমে কোরবানি দেওয়ার অহংকারের অহমিকা!!
দুঃখজনক হলেও সত্য যে,যেখানে থাকে না কোন কোরবানির প্রকৃত হকিকতের ইসলামের আদর্শগত শিক্ষা বা অর্থ ! আল্লাহপাকের একান্ত সন্তুষ্টি অর্জন পূর্বক প্রেম ভালোবাসা বা নিজস্ব ঈমানী হৃদয়ের প্রিয় বস্তু বা জানের বস্তুকে কোরবানির দেওয়ার প্রকৃত হাকিকি মূলক ফজিলতপূর্ণ ধর্মীয় আদেশ-নিষেধ এবং প্রকৃত কোরবানির আল্লাহ প্রদত্ত পূর্ণাঙ্গ মূল হকিকতগত হাকিকি!
বাস্তবিক অর্থে বলতে গেলে প্রকৃতি ও পরিবেশগত স্থান-কাল-মাত্র ভেদে বিশ্লেষণ করিলে যদি পতিওমান হয় যে, নিজ হইতে অতি যত্নে সন্তানের মত পশু লালন পালন করা পরিবেশগত ভাবে সম্ভব হচ্ছে না, তাহলে কিছু না হলেও কোরবানির কয়েকদিন আগে হাট বা বাজার হইতে নিজের কষ্টার্জিত হালাল উপায়ে ইনকামকৃত অর্থ বা টাকায় স্বাধ ও সাধ্যের মধ্যে কোন প্রতিযোগিতা বা গোস্তের হিসাব নিকাশ না করিয়া লোক দেখানো কোন লৌকিকতার অহমিকা বা অহংকার না দেখিয়া সম্পূর্ণরূপে আল্লাহ্ তালার সন্তুষ্টি অর্জনের পূর্ণাঙ্গ ঈমানী মন-মানসিকতা নিয়তে কোরবানির পশু ক্রয় করে আনিতে হবে এবং তাহাকে কোরবানি দেওয়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত যতটুকু সম্ভব অতি যত্নে মনের আবেগী আবেগে একমাত্র আল্লাহ তালার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য তাকে লালন পালন করিতে হইবে এবং ঐ পশুর প্রতি নিজের প্রিয় বস্তু হিসেবে পৃথিবী কামিয়াবি ষড়রিপুর এক একটি পশু সুলভ নিজো মনের ভিতরের বিরাজমান হিংস্র পশুরুপি কু-খায়েস কে,আল্লাহর প্রকৃত নির্দেশ অনুযায়ী কোরবানির সঠিক হকিকতের ঈমানী জজবার মহত্বতা ও মর্যাদা হৃদয়ে ধারণ করিয়া কোরবানি করিতে হবে একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের রাহে। এক কথায় বলতে হয় “মনের পশু কে দাও কোরবানি, বনের পশু কে নই।” তাই এই পৃথিবীর নিজেশ্ব মায়াবী অতিপ্রিয় জানের বস্তুকে নির্দিষ্ট নিয়মে কোরবানি দিতে হবে শুধুমাত্র আল্লাহর প্রেমে নিমজ্জিত হয়ে আল্লাহ্-র সন্তুষ্টি অর্জনের তরে।
লেখনীয় প্রতিবেদনেঃ-জাহারুল ইসলাম জীবন।
[ সাংবাদিক,লেখক,কবি ও সাহিত্যিক এবং গবেষক-( জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত ]

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
© All rights reserved © 2023 দৈনিক ক্রাইমসিন
Theme Customized BY ITPolly.Com