নীলফামারীতে প্রতিবন্ধীর বাড়ি দখল ও লুটপাট, ঘটনা আড়াল করতে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি অভিযোগ
মোঃ বাদশা প্রামানিক নীলফামারী প্রতিনিধিঃ
নীলফামারীতে পুলিশের সহায়তায় প্রতিবন্ধীর বসতবাড়িতে হামলা,ভাংচুর, মারপিট,জবরদখল ও লুটতরাজের ঘটনা ঘটেছে । ঘটনার দায় এড়াতে প্রতিবন্ধী পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে হয়রানীর অভিাযো পাওয়া গেছে । প্রতিপক্ষের দায়ের কৃত মিথ্যা মামলায় আসামি হয়ে বাস্তহারা পরিবারটি এখন পুলিশের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। অসহায় পরিবারটিকে বাঁচাতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষে ও সুদৃষ্টি কামনা করছেন বাস্তহারা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারটিসহ এলাকার সচেতন মহল।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, নীলফামারী সদরের কুন্দু পুকুর গ্রামের মৃত জফুর আলীর ছেলে শ্রবণ প্রতিবন্ধী সোলেমান আলী তার মাতা মৃত সালেহা বেগমের ওয়ারিশ সূত্রে প্রাপ্ত এস,এ ৪৯৫ বি,এস ১০৬ নং খতিয়ানের এস,এ ৩৮৩২ বি,এস ৫৭৯৩ নং দাগে ৪০ শতক জমির মালিক হইয়া বসতবাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করে আসছিলেন। একই এলাকার মৃত বাবুদ্ধি মামুদের পুত্র আজহার আলীর নেতৃত্বে তার ছেলে বেলাল হোসেন( ৪০) ও আবুল বাশার (৪৫) দ্বয় ২০/২৫ জন সশস্ত্র দল নিয়ে সন্ত্রাসী কায়দায় গত ১৯ নভেঃ/২৪ইং রাতে নীলফামারী সদর থানার এস,আই শরিফুল ইসলাম ও সঙ্গীয় পুলিশ ফোর্স টিমের উপস্থিতিতে ও সয়তায় ওই প্রতিবন্ধী সোলেমানের বাড়িতে হামলা চালানো হয়। এ সময় বাধা দিতে গিয়ে ওই পরিবারের ফরিদা বেগম (৪৫),মমতা বেগম (৩০) ও সালমা বেগম (৩৫) সহ ৩ নরী সদস্য হামলার শিকার হয়ে গুরুতর আহত হয়ে নীলফামারী সরকারী আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। হামলাকারীরা পুলিশের উপস্থিতিতে ভুক্তভোগী পরিবারটিকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়ে বসতবাড়ি ভাঙচুর করে ও আসবাবপত্রসহ প্রায় তিন লক্ষ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। প্রকৃত ঘটনা আড়াল করতে ও ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহে উল্টো প্রতিবন্ধী সোলায়মান সহ পরিবারের ১০ জন সদস্যের বিরুদ্ধে নীলফামারী সদর থানায় একটি পরিকল্পিত মিথ্যা মামলা (নং-৪ জি,আর-৩৫৯/২৪ ইং) দ্বায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর হতে ভুক্তভোগী ঐ পরিবারটি পুলিশের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কুন্দুপুকুর গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম (৩২) বলেন,পুলিশের উপস্থিতিতে এরকম একটি নারকীয় ঘটনা ঘটবে চোখে না দেখে কেউ বললে বিশ্বাস করতাম না। একই গ্রামের মোকছেদ আলী (৪০) বলেন,সেদিন পুলিশের উপস্থিতিতে একটা পরিবারকে এভাবে উচ্ছেদ করবে ভাবতে পারিনি। ওই গ্রামের জলিল উদ্দিন (৫৫) বলেন,আমার উপস্থিতিতে একটা পরিবারকে উচ্ছেদ করা হলো মেনে নিতে চাইনি,প্রতিবাদ করতাম কিন্তু পুলিশের উপস্থিতে ও সহায়তায় ঘটনা ঘটায় প্রতিবাদ করার সাহস পাইনি। ঘটনার বিষয় ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে প্রতিবন্ধী সোলেমানের স্ত্রী জাহিমা বেগম (৫৫) কান্না জড়িত কন্ঠে অভিযোগ করে বলেন,গত ১৯ নভেম্বর রাত ১০ টায় নীলফামারী সদর থানার এস,আই শরিফুল ইসলাম সহ ৫/৬ জন পুলিশ সদস্যের সহায়তায় আজহার আলী, বেলাল হোসেন ও আবুল বাশার সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে আমার বাড়িতে সন্ত্রাসী হামলা চালায়, বাড়িঘর ভাংচুর করে,আমাদেরকে মারপিট করে আহত করে এবং বসত ঘর ও আসবাবপত্র সহ মালামাল লুট করে নিয়ে যায় । প্রসঙ্গত ঘটনার পূর্বে অভিযুক্তরা ভয় ভীতি ও হুমকি প্রদান করায় জাহিমার কন্যা সালমা বেগম বাদী হয়ে গত ৩ ডিসেম্বর নীলফামারী অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এম আর নং- ৪৭/২৪ দায়ের করলে বিজ্ঞ আদালতে শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য নীলফামার সদর থানার অফিসার ইনচার্জকে দায়িত্ব দেন।
আমি ওই পুলিশ অফিসার সহ সন্ত্রাসী বাহিনীর দৃষ্টান্তমূল শাস্তি চাই। যারা আমার বসতবাড়ি ভাঙচুর করল লুটপাট করল, মারপিট করলো তারাই আবার আমাদের নামে মিথ্যা মামলা করল। প্রতিপক্ষরা এলাকার প্রভাবশালী, ধনাঢ্য ও সন্ত্রাসী। আমরা এক দিকে বাস্ত হারা অপরদিকে মিথ্যা মামলার আসামি হয়ে পুলিশের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। এ বিষয়ে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাহায্য কামনা করছি । তিনি এটাও জানান যে, সেদিনের ঘটনায় থানায় মামলা করতে গিয়েছিলেন, পুলিশ মামলা নেয়নি,উল্টো গ্রেপ্তারের ভয়ভীতি দেখিয়ে থানা থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। নিরুপায় হয়ে নীলফামারী আমলি আদালতে (পিটিশন নং ৬০৪/২৪) মামলা দ্বায়ের করেছি। মামলাটি পিবিআই এর কাছে তদন্তাধীন আছে। ঘটনার বিচার দাবি করে ভুক্তভোগী পরিবারের গৃহকর্ত্রী জাহিমা বেগম গত ১১ মার্চ/২৫ ইং পুলিশের রংপুরের ডিআইজি ও নীলফামারী পুলিশ সুপার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
নীলফামারী সদর থানার এস,আই শরিফুল ইসলামের কাছে ঘটনার বিষয় জানতে চাইলে তিনি অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করেন।
ঘটনার বিষয়ে নীলফামারী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ এম,আর সাঈদ জানান, ওই মামলার তদন্তকারী অফিসার, পি,এস,আই শরিফুল ইসলাম । সে ছুটিতে আছে। ছুটি থেকে আসলে ঘটনা বিষয় জেনে ব্যাবস্হা নেয়া হবে।
অভিযোগের বিষয়ে নীলফামারী পুলিশ সুপার এ,এফ,এম তারেক হোসেন খান জানান, আমি নতুন এসেছি,ঘটনার বিষয়ে আমার জানা নেই। তবে এরকম একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তে এর সত্যতা পাওয়া গেলে ওই পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে বিধিগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
প্রকাশক ও সম্পাদক : কায়েস আহমদ সালমান
হেড অফিস: সায়হাম ফিচার কমপ্লেক্স মাধবপুর হবিগঞ্জ Email: www.dainikcrimesin@gmail.com