দেশজুড়ে ধর্ষণ আতঙ্কঃ ৭২-ঘণ্টায় ৭টি ঘর্ষণ,বিচারহীনতায় ক্ষোভের আক্রোশে উত্তাল সারা বাংলাদেশ।
বিশেষ প্রতিনিধি-জাহারুল ইসলাম জীবন।
দেশজুড়ে নারী ও শিশু ধর্ষণের ঘটনা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। গত ৭২-ঘণ্টায় রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, মাগুড়া, বগুড়া সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অন্তত ৭টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে দুটি ঘটনায় শিশু ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এসব ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হলেও, বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতা এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির অভাবে জনমনে ক্ষোভ বাড়ছে।
সাম্প্রতিক ধর্ষণের ঘটনাঃ-
**ঢাকা: রাজধানীর মিরপুরে এক কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় স্থানীয় তিন যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
**চট্টগ্রাম: বন্দরনগরীতে এক গার্মেন্টস কর্মীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্ত ব্যক্তি পলাতক রয়েছে।
**রাজশাহী: রাজশাহীর বাগমারায় পাঁচ বছর বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় স্থানীয় এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে।**এছাড়াও,মাগুরার শিশু আছিয়া ও বগুড়া ঈশিতা সহ নরসিংদী, খুলনা, বরিশাল এবং কুমিল্লাতে একটি করে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।
পরিসংখ্যান ও বিশ্লেষঃ-
আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে সারাদেশে প্রায় ১০০টির বেশি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে শিশু ধর্ষণের সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, বিচারহীনতার সংস্কৃতি এবং সামাজিক সচেতনতার অভাবের কারণে ধর্ষণের ঘটনা বাড়ছে।
জনগণের ক্ষোভঃ-
ধর্ষণের ঘটনায় দ্রুত বিচার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নারী অধিকার কর্মীরা বলছেন, সরকার কঠোর আইন প্রণয়ন করলেও, তার সঠিক বাস্তবায়ন হচ্ছে না। তারা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন এবং ধর্ষণ মামলাগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তির দাবি জানিয়েছেন।
প্রশাসনের বক্তব্যঃ-
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। তারা দ্রুত মামলাগুলোর তদন্ত শেষ করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করার আশ্বাস দিয়েছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতামতঃ-
সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন, সামাজিক মূল্যবোধের অবক্ষয়, পর্নোগ্রাফির সহজলভ্যতা এবং মাদকের বিস্তার ধর্ষণের অন্যতম কারণ। তারা সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি এবং পারিবারিক শিক্ষা জোরদারের পরামর্শ দিয়েছেন।
ধর্ষণের প্রতিকার ও করণীয়ঃ-
**ধর্ষণ মামলাগুলোর দ্রুত বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা।
**আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা এবং বিচারহীনতার সংস্কৃতি দূর করা।
**সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি এবং পারিবারিক শিক্ষা জোরদার করা।
**আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সক্ষমতা বাড়ানো এবং তাদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।
**পাশাপাশি, স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসায় নারী ও শিশু নির্যাতন সহ ধর্ষণ বিষয়ক সেমিনার আয়োজন করা এবং সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা।
সর্বোপরি ধর্ষণ প্রতিরোধে সরকার, প্রশাসন, সমাজ এবং দেশের প্রতিটি নাগরিককে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।