বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ ২০২৩, ০৩:৫৭ পূর্বাহ্ন
মাধবপুর প্রতিনিধিঃ
চারদিকে গাছভর্তি বরই। ছোট গাছগুলো ফলের ভারে মাটিতে নুয়ে পড়েছে ।গাছের ডাল যেন ভেঙ্গে না পড়ে সেজন্য ছোটছোট বাঁশের খুটি দিয়ে মাচা তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। হবিগঞ্জের মাধবপুরে কৃষক শফিকুল ইসলাম আবুল এর শখের বরই বাগানে গিয়ে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে।
অনেকটা শখের বশে বিভিন্ন উন্নত জাতের বরই আবাদ করে সফল হয়েছে মাধবপুর উপজেলার শাহজাহানপুর ইউনিয়নের রতনপুর গ্রামের কৃষক আবুল। গত বছর মার্চ মাসে এক বন্ধুর মধ্যেমে খুলনা’র পাইকগাছা থেকে বিভিন্ন উন্নত জাতের বরইয়ের ৩শ চারাগাছ এনে ৯০ শতাংশ জমিতে রোপণ করেন।
পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শ নিয়ে কোন ধরনের কীটনাশক ব্যবহার না করে শুধু গোবর সহ জৈবসার ব্যবহার করেন গাছের পরিচর্যায়। এবছর জানুয়ারি থেকে বরই বিক্রি শুরু হয়। শফিকুল ইসলাম আবুল জানান, ২০২২ সালের মার্চে খুলনা থেকে ৩শ টি বল সুন্দরী, আরবি কুল, কাশ্মীরি কুল ও বাউ কুল এর চারাগাছ এনে রোপণ করি । কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে জমিতে কোন ধরনের কীটনাশক ও রাসায়নিক সার ব্যবহার না করে শুধু জৈব সার ব্যবহার করেছি। এখন পর্যন্ত প্রায় এক লাখ টাকা খরচ হয়েছে।
এবছর জানুয়ারি থেকে স্থানীয় বাজারে বরই বিক্রি শুরু করেছি। খুবই মিষ্টি হওয়ায় স্থানীয় বাজারেই সব বরই বিক্রি হয়ে যায়। প্রতিদিন গড়ে পঞ্চাশ কেজি বরই ১শ টাকা কেজি দরে স্থানীয় নোয়াহাটি বাজারে বিক্রি করি। এখন পর্যন্ত প্রায় এক লাখ টাকার বরই বিক্রি করেছি। আশাকরি চলতি মৌসুমে আরও এক লাখ টাকার বরই বিক্রি করতে পারবো। তিনি আরও জানান, এবছর নতুন করে আরও কিছু জমিতে চারাগাছ লাগানোর পরিকল্পনা আছে এবং অনেকেই বরই খাওয়ার পর চারাগাছ চাইছে। তাই কলম করে চারা প্রস্তুত করতেছি মার্চ মাসে নিজের ও স্থানীয় আগ্রহী চাষিদের চাহিদা পূরণের জন্য।
এব্যাপারে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোহন লাল নন্দী বলেন, আমি শফিকুল ইসলাম আবুল এর বরই বাগানে গিয়ে তাকে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করেছি। উনার বাগান দেখে অনেকেই উদ্ভুদ্ধ হয়ে আমাদের নিকট পরামর্শ চাইছে। আমি আমাদের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের দিকনির্দেশনা নিয়ে তাদের বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো:মামুন আল হাসান জানান, আমরা বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় পতিত পড়ে আছে এমন জমির মালিকদের ফলের বাগান করতে পরামর্শ দেই এবং চারাগাছ, সার বীজ সহ বিভিন্ন সহায়তা করি। মাধবপুর উপজেলায় প্রায় পাঁচশো হেক্টর জমিতে ছোট-বড় প্রায় সাড়ে ছয়শো মাল্টা, বরই, ড্রাগন, পেয়ারা সহ বিভিন্ন ফলের বাগান আছে। আগামীতে এই সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাবে।